Maternity benefit calculation method I প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার হিসাব নির্ধারন পদ্ধতি I

প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার হিসাব নির্ধারন পদ্ধতি I Maternity benefit calculation method I

প্রাথমিক কথনঃ
প্রসূতি কল্যান সুবিধার হিসাব নির্নয়ের জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর জন্ম সংক্রান্ত কিছু তথ্য জানা আবশ্যক। এই আইনটি প্রণয়নের পুর্বে ২৫ টি আইন ছিল যে গুলো শ্রমিক এবং মালিকদের বিভিন্ন বিষয়ে অধিকার নিশ্চিত করত। উক্ত আইন সমূহ অত্র আইন দ্বারা বাতিল করা হয় এবং উক্ত আইন সমূহে শ্রমিক এবং মালিকদের যে সব অধিকার নিশ্চিত করা হয় তা অত্র আইন দ্বারা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়। উক্ত আইন সমূহ প্রত্যেকটি স্বতন্ত্র থাকায় প্রত্যেকটির জন্য একই বিষয়ের আলাদা আলাদা সংজ্ঞা ছিল। যেমন শ্রমিক, মজুরী সহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য একাধিক বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন আইনে ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা ছিল। প্রত্যেকটা আইনে আইনের উদ্দেশ্যর সাথে সঙ্গতি রেখে সংশ্লিষ্ট সংজ্ঞা সমূহ বিদ্যমান ছিল এবং একই বিষয়ের প্রত্যেকটা সংজ্ঞায় সংশ্লিষ্ট আইনের উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতি রেখে ভিন্ন ভিন্ন অর্থে বুঝাত। উক্ত আইন সমূহ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর বিভিন্ন অধ্যায়ে সমন্বিত করায় বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর বিভিন্ন অধ্যায়ে একই বিষয়ে একাধিক সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। তাই নিন্মোক্ত আলোচনা বুঝার স্বার্থে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ প্রণয়নের পটভূমি, একই আইনে একই বিষয়ে একাধিক সংজ্ঞা কেন প্রদান করা হয়। প্রত্যেকটা সংজ্ঞার অন্তর্নিহিত অর্থ এবং সংজ্ঞা কার্যকরের পরিধি প্রযোজ্যতা কিভাবে নির্ধারিত হয় তার সম্পর্কে ধারনা থাকা অত্যাবশ্যক। নিন্মের আলোচনাটি বুঝার জন্য উপরোক্ত বিষয়াবলী জানা হচ্ছে প্রাথমিক জ্ঞান। উক্ত বিষয় সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান না থাকলে নিন্মোক্ত আলোচনা বুঝা কিছুটা জটিল হবে।

মূল আলোচনাঃ
প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার হিসাব নির্ধারন পদ্ধতি আলোচনার পুর্বে আমাদেরকে প্রথমে ইহার সাথে সংশ্লিষ্ট আইনের ধারা সমূহ আলোচনা করতে হবে। প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার হিসাব নির্ধারনের জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা(৩৪), (৪৫), ৪৮ এবং ১২০ নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং এসকল ধারার অন্তনিহিত প্রায়োগিক অর্থ বুঝতে হবে। আমরা প্রথমে উক্ত ধারা সমূহ হুবহু তুলে ধরব, অতঃপর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এসব ধারার অর্থ বুঝার চেষ্টা করব এবং পরিশেষে একটি উদাহরনের মাধ্যমে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার পরিমাণ নির্ধারন করব।
এখানে উল্লেখ্য যে অত্র আলোচনায় উক্ত ধারা সমূহ প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার হিসাব নির্ধারনের ক্ষেত্রে যতটুকু প্রাসঙ্গিক ততটুকু আলোচনা করা হয়েছে। জটিলতা নিরসন সহজ বোধগম্যতার জন্য প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক কিন্তু প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার হিসাব নির্ধারনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয় এমন অতিরিক্ত বিষয়াবলী অত্র আলোচনায় পরিহার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর সংশ্লিষ্ট ধারা সমূহ এবং উক্ত ধারা সমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাখ্যা নিন্মে তুলে ধরা হলঃ
ধারা(৩৪):
"প্রসূতি কল্যাণঅর্থ চতুর্থ অধ্যায়ের অধীন কোন মহিলা শ্রমিককে তাহার প্রসূতি হওয়ার কারণে প্রদেয় মজুরিসহ অন্যান্য সুবিধা।

ব্যাখ্যাঃ প্রসূতি কল্যাণ সংক্রান্ত সুবিধার ব্যাপ্তি বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর চতুর্থ অধ্যায়ের অধীন। অর্থাৎ প্রসূতি কল্যাণ সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত চতুর্থ অধ্যায়ের আলোকে হবে, উক্ত অধ্যায় ব্যতিত অন্য কোন অধ্যায় এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক নয়।
অত্র সংজ্ঞায় অন্যান্য সুবিধা বলতে চতুর্থ অধ্যায়ের অধীন প্রদত্ত অন্যান্য সুবিধাকে বুঝবে। যেমনঃ- . সংশ্লিষ্ট শ্রমিক দিয়ে দুষ্কর বা শ্রমসাধ্য, দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে হয় এমন কোন কাজ এবং স্বাস্থ্য হানিকর কাজে নিয়োগ করা যাবে না; . এমন কোন আচরণ বা মন্তব্য না করা যাহাতে তিনি শারীরিক বা মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হন বা অপমানিত বোধ করেন; . সরকার কর্তৃক ঘোষিত ঝুকিপূর্ণ কাজে বা তাহার স্বাস্থ্যের প্রতি ঝুকিপূর্ণ হয় এমন কোন কাজে নিয়োজিত না করা; . ঝুকিবিহীন কাজে স্থানান্তর বা পদায়ন করা; . কর্মকালীন লিফট ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদান করা; . সন্তান প্রসবকালে তাহার শিশুর দুগ্দ্ধ পানের সুযোগ পরিবেশ নিশ্চিত করা; . সন্তান প্রসবের পূর্ববর্তী ছয় মাস এবং সন্তান প্রসবের পরবর্তী আট সপ্তাহ মেয়াদের মধ্যে যথেষ্ট কারন ব্যতীত চাকুরির অবসায়নে বাধা ইত্যাদি।

ধারা - (৪৫):
"মজুরীঅর্থ টাকায় প্রকাশ করা হয় বা যায় এমন সকল পারিশ্রমিক যাহা চাকুরীর শর্তাবলী, প্রকাশ্য বা উহ্য যেভাবেই থাকুক না কেন পালন করা হইলে কোন শ্রমিককে তাহার চাকুরীর জন্য বা কাজ করার জন্য প্রদেয় হয়, এবং উক্তরূপ প্রকৃতির অন্য কোন অতিরিক্ত প্রদেয় পারিশ্রমিকও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, তবে নিম্মলিখিত অর্থ ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যথাঃ-
() বাসস্থান সংস্থান, আলো, পানি, চিকিৎসা সুবিধা বা অন্যকোন সুবিধা প্রদানের মূল্য অথবা সরকার কর্তৃক সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা বাদ দেওয়া হইয়াছে এইরূপ কোন সবার মূল্য;
() অবসর ভাতা তহবিল বা ভবিষৎ তহবিলে মালিক কর্তৃক প্রদত্ত কোন চাদা;
() কোন ভ্রমণ ভাতা অথবা অন্য কোন ভ্রমন রেয়াতের মূল্য;
() কাজের প্রকৃতির কারণে কোন বিশেষ খরচ বহন করিবার জন্য কোন শ্রমিককে প্রদত্ত অর্থ;

ব্যাখ্যাঃ উক্ত সংজ্ঞা অনুসারে মজুরী বলতে সংজ্ঞায় উল্লেখিত কতিপয় ব্যতিক্রম ব্যতীত চাকুরীর শর্তাবলী পালনের অংশ হিসেবে কোন শ্রমিককে চাকুরীর জন্য বা কাজ করার জন্য প্রদেয় হয় এবং উক্তরূপ প্রকৃতির অন্য কোন অতিরিক্ত প্রদেয় পারিশ্রমিকও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে অর্থাৎ চাকুরীর শর্ত অনুসারে স্বাভাবিক সময় বা অধিকাল সময় কাজের জন্য যে পারিশ্রমিক দেয়া হয় তাই মজুরী।
উক্ত সংজ্ঞার বাস্তব কর্মপরিবেশে প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংজ্ঞায় উল্লেখিত কতিপয় ব্যতিক্রম ব্যতীত একজন শ্রমিককে নিদিষ্ট সময় কাজ করার জন্য প্রদেয় পারিশ্রমিক এবং অতিরিক্ত সময় কাজের জন্য অতিরিক্ত প্রদেয় পারিশ্রমিক অত্র সংজ্ঞা মতে মজুরী হিসেবে পরিগণিত হবে। অর্থাৎ সংজ্ঞা অনুসারে চাকুরীর শর্তাবলী পালনে, একজন শ্রমিককে চাকুরীর জন্য বা কাজের জন্য প্রদেয় মোট মজুরী এবং অধিকাল কাজের জন্য প্রদেয় অধিকাল ভাতাকে মজুরী বলা হয়েছে।
মজুরীর সংজ্ঞাটির প্রয়োগ কোন অধ্যায়ের জন্য সুনির্দিষ্ট সীমিত না করায়, শ্রম আইনের যে সব ক্ষেত্রে মজুরীর বিশেষ সংজ্ঞা প্রণীত হয়েছে সে সব ক্ষেত্র ব্যতিত অন্য সব ক্ষেত্রে অধ্যায়ের জন্য প্রযোজ্য হবে আর্থাৎ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ কোন অধ্যায়ে বিশেষ উদ্দেশ্য প্রণীত সংজ্ঞা ব্যতীত অন্য সব ক্ষেত্রে মজুরী বলতে অত্র সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত মজুরীকে বুঝবে।

ধারা- ১২০ মজুরীর বিশেষ সংজ্ঞাঃ-
বিষয় অথবা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই অধ্যায়ে "মজুরী" বলিতে ধারা (৪৫) মজুরী বলিতে যে অর্থ করা হইয়াছে তাহা, এবং নিম্নলিখিত পাওনাগুলিও ইহার অর্ন্তভুক্ত হইবে, যথাঃ-
() নিয়োগের শর্ত মোতাবেক প্রদেয় কোন বোনাস অথবা অন্য কোন অতিরিক্ত পারিশ্রমিক;
() ছুটি, বন্ধ অথবা অধিকাল কর্মের জন্য প্রদেয় কোন পারিশ্রমিক;
() কোন আদালতের আদেশ অথবা পক্ষদ্বয়ের মধ্যে কোন রোয়েদাদ বা নিষ্পত্তির অধীনে প্রদেয় কোন পারিশ্রমিক;
() চাকুরীর অবসান, উহা ছাটাই, ডিসচার্জ, অপসারণ, পদত্যাগ, অবসর, বরখাস্ত অথবা অন্য যে ভাবেই হউক না কেন, এর কারণে কোন চুক্তি বা এই আইনের অধীন প্রদেয় কোন অর্থ; এবং
() লে-অফ অথবা সাময়িক বরখাস্তের কারণে প্রদেয় কোন অর্থ।

ব্যাখ্যাঃ এটি একটি মজুরীর বিশেষ সংজ্ঞা, এই সংজ্ঞাটি প্রদান করা হয়েছে শুধু মাত্র দশম অধ্যায়ের জন্য। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর দশম অধ্যায় হচ্ছে মজুরী উহার পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়। একজন মালিক তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজন শ্রমিক কে শুধুমাত্র তার কাজের জন্য পারিশ্রমিক প্রদান করে না, এর সাথে সাথে উক্ত শ্রমিকের সাথে সম্পাদিত চুক্তি এবং রাষ্ট্রে প্রচলিত শ্রম আইন অনুসারে আনুসঙ্গিক অনেক সুযোগ- সুবিধা (যা অত্র ধারায় মজুরীর সংজ্ঞাভুক্ত করতে নিম্নলিখিত পাওনাগুলি বলে উল্লেখ করা হয়েছে) প্রদান করতে হয়।
সব সুবিধা আদায় এবং মালিকের দায় সৃষ্টির জন্য শুধুমাত্র অত্র অধ্যায়ের প্রয়োজনে মজুরীর এই সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে, যেখানে অত্র আইনে মজুরীর (৪৫) প্রদত্ত সংজ্ঞা সহ শ্রমিকের অন্যান্য পাওনা গুলোও মজুরীর সংজ্ঞাভুক্ত করা হয়েছে। শ্রম আইনে মজুরীর অন্য কোন সংজ্ঞা ব্যতীত শুধুমাত্র অত্র সংজ্ঞায় যে সব বিষয়াবলী মজুরী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে তা অত্র অধ্যায়ের প্রয়োজন ব্যতিত অন্য কোন অধ্যায়ের প্রয়োজনে মজুরী হিসেবে পরিগনিত হইবে না। কারন মজুরীর সংজ্ঞাটিতে সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ আছে শুধুমাত্র অধ্যায়ে মজুরী বলতে কি বুঝাবে তা অত্র সংজ্ঞা দ্বারা নির্ধারিত হবে। অত্র সংজ্ঞায় মজুরী বলতে যা বুঝিয়েছেন তা শুধুমাত্র অত্র অধ্যায়ের ধারা ১২০ হতে ১৩৭ এর প্রয়োজনে মজুরী হিসাবে পরিগনিত হবে। অত্র অধ্যায় এবং উল্লেখিত ধারা সমুহ ব্যতিত শ্রম আইনের অন্য কোন অধ্যায়ের বা অন্য কোন ধারার প্রয়োজনে অত্র সংজ্ঞায় মজুরী হিসেবে সংজ্ঞায়িত মজুরী, মজুরী হিসেবে পরিগনিত হইবে না। কেননা সংজ্ঞা নিজেই বলে দিচ্ছে তার নিজের পরিধি কতটুকু হবে।
কোন মালিকের অধীনে যখন একজন শ্রমিক কাজ করেন তখন শুধুমাএ কাজের জন্য পারিশ্রমিক বা অতিরিক্ত কাজের জন্য মজুরি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট মালিকের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। উক্ত মালিককে চাকুরির নিয়োগের শর্ত এবং রাষ্ট্রে প্রচলিত আইন অনুসারে আনুষঙ্গিক আরো অনেক কিছু প্রদান করতে হয়। অনেক সময় উক্ত আনুষঙ্গিক বিষয়াবলী অর্থের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। শ্রম আইনের ধারা (৪৫) এর অধীন নির্ধারিত সময় এবং অধিকাল কাজের জন্য প্রদেয় মজুরী ব্যতীত অন্য যে সব আনুষঙ্গিক বিষয় প্রদান করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ নিয়োগের শর্ত মোতাবেক প্রদেয় কোন বোনাস অথবা অন্য কোন অতিরিক্ত পারিশ্রমিক; ছুটির (অভোগকৃত) বা বন্ধের জন্য প্রদেয় কোন পারিশ্রমিক; কোন আদালতের আদেশ অথবা পক্ষদ্বয়ের মধ্যে কোন রোয়েদাদ বা নিষ্পত্তির অধীনে প্রদেয় কোন পারিশ্রমিক; চাকুরীর অবসান, উহা ছাটাই, ডিসচার্জ, অপসারণ, পদত্যাগ, অবসর, বরখাস্ত অথবা অন্য যে ভাবেই হউক না কেন, এর কারণে কোন চুক্তি বা এই আইনের অধীন প্রদেয় কোন অর্থ; এবং লে-অফ অথবা সাময়িক বরখাস্তের কারণে প্রদেয় কোন অর্থ। উক্ত আনুষঙ্গিক বিষয়াবলী মালিক কর্তৃক পরিশোধের দায় সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১২০ ধারায় মজুরীর সংজ্ঞাভুক্ত করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র অত্র অধ্যায়ের প্রয়োজনে মজুরী হিসেবে পরিগণিত হবে।
সব সুবিধা পরিশোধের অধিকার শ্রমিক কর্তৃক দাবি এবং মালিক কর্তৃক নিশ্চিত করার জন্য এবং উক্ত অধিকার আদায়ে কোন বিরোধ সৃষ্টি হলে, উক্ত বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে এই সকল অধিকারসমূহ অর্থের মানে দশম অধ্যায়ের অধীনে মজুরী হিসেবে পরিগনিত হয়।

দশম অধ্যায়ের অধীনে নিন্মলিখিত ধারা সমুহের উদ্দেশ্যের পরিপুর্নতার কল্পে মজুরীর ১২০ ধারার বিশেষ সজ্ঞাটি প্রয়োজ্যঃ ধারা ১২১ ( মজুরী পরিশোধের দায়িত্ব), ধারা ১২২ (মজুরিকাল স্থিরিকরণ), ধারা ১২৩ (মজুরী পরিশোধের সময়), ধারা ১২৪ ( প্রচলিত মুদ্রা অথবা কারেন্সী নোট দ্বারা মজুরী পরিশোধ), ধারা ১২৫ ( মজুরী হতে কর্তনযোগ্য বিষয়াদি), ধারা ১২৬ ( কর্তব্যে অনুপস্থিতির জন্য মজুরী কর্তন), ধারা ১২৭ (ক্ষতি বা বিনষ্টির জন্য মজুরী কর্তন), ধারা ১২৮ (সেবা প্রদানের জন্য মজুরী কর্তন) ধারা ১২৯ ( কর্জ বা অগ্রিম আদায়ের জন্য মজুরী কর্তন), ধারা ১৩০ (মজুরি হতে অন্যান্য কর্তন), ধারা ১৩১( মৃত শ্রমিকের মজুরী পরিশোধ), ধারা ১৩২ ( মজুরী হতে কর্তন বা মজুরী বিলম্বে পরিশোধের কারণে উৎথাপিত দাবী), ধারা ১৩৩(ধারা ১৩২ এর অধীন দরখাস্তের ক্ষেএে কোর্ট ফিস), ধারা ১৩৪ ( মজুরী প্রাপ্ত হন নাই অথবা মজুরী কর্তিত হইয়াছে এইরূপ শ্রমিকদের পক্ষে দাবী আদায়ের জন্য একটি মাএ দরখাস্ত), ধারা ১৩৫ (আপীল), ধারা ১৩৬ ( মালিক বা মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী অন্য কোন ব্যক্তির সম্পত্তির শর্তাধীন ক্রোক), ধারা ১৩৭ ( কতিপয় ক্ষেএে মালিকের নিকট হইতে অর্থ আদায়)

ধারা- ১৪() সুনির্দিষ্ট কিছু ধারার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মজুরীর বিশেষ সংজ্ঞাঃ
ধারা ১৯, ২০ অথবা ২৩ এর অধীন ক্ষতিপূরণ অথবা ধারা ২২, ২৩, ২৬ অথবা ২৭ এর অধীন মজুরী হিসাবের প্রয়োজনেমজুরীবলিতে শ্রমিকের ছাঁটাই, বরখাস্ত, অপসারণ, ডিসচার্জ, অবসর গ্রহণ বা চাকুরীর অবসানের অব্যবহিত পূর্বের বার মাসে প্রদত্ত তাহার মূল মজুরী এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অর্ন্তবর্তী মজুরী, যদি থাকে এর গড় বুঝাইবে
ব্যাখ্যাঃ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুসারে এটি মজুরীর একটি বিশেষ সংজ্ঞা। অত্র সংজ্ঞায় মজুরী বলতে যা বুঝনো হয়েছে তা শুধুমাত্র দ্বিতীয় অধ্যায়ের নির্ধারিত কিছু ধারার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। সংশ্লিষ্ট ধারা সমূহের ক্ষেত্রে ধারা ভেদে উক্ত সংজ্ঞায়িত মজুরীর প্রয়োগ ভিন্ন, যেমন ধারা ১৯, ২০, ২২ এর অধীন ক্ষতিপূরণ আবার ধারা ২২, ২৩, ২৬ এবং ২৭ এর অধীন মজুরী হিসাবের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
উক্ত স্ংজ্ঞা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর দ্বিতীয় অধ্যায় এবং উক্ত অধ্যায়ের উল্লেখিত ধারা সমুহ ব্যতিত শ্রম আইনের অন্য কোন অধ্যায়ের বা অন্য কোন ধারার প্রয়োজনে অত্র সংজ্ঞায় মজুরী হিসেবে সংজ্ঞায়িত মজুরী, মজুরী হিসেবে পরিগনিত হইবে না। কেননা সংজ্ঞা নিজেই বলে দিচ্ছে তার নিজের পরিধি কতটুকু হবে।

[নোটঃ আইন প্রনয়নের প্রসংগ এবং উদ্দেশ্যের সঠিক বাস্তবায়ন যথাযথ লক্ষ্যে অর্জনে একই বিষয়ের একাধিক সংজ্ঞা এবং উক্ত সংজ্ঞার প্রয়োগের পরিধি কতটুকু হবে তা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ একাধিক বার এসেছে, বুঝার সুবিধার্থে দুটি উদাহরণ দেয়া হল যেমনঃ
) ধারা- ১৪ কতিপয় ক্ষেত্রে "এক বৎসর", ”ছয় মাসএবং "মজুরী" গননার স্পেশাল একটি হিসাব দেয়া আছে। এই হিসাবটি শুধুমাত্র দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রযোজনে ব্যবহৃত হবে যা সংজ্ঞায় স্পষ্ট করে বলা আছে। অর্থাৎ হিসাবটি "এক বৎসর", ”ছয় মাসএবং "মজুরী" গননা ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রয়োজন ব্যাতিত অন্য কোন অধ্যায়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না। ইহার পরিধি শুধুমাত্র দ্বিতীয় অধ্যায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
) শ্রমিকের সংজ্ঞা ধারা (৬৫) এবং ১৭৫ আলাদা আলাদা ভাবে প্রদান করা হয়েছে। ধারা (৬৫) প্রনীত শ্রমিকের সংজ্ঞা কোন অধ্যায়ে শ্রমিকের স্পেশাল কোন সংজ্ঞা ব্যতিত শ্রম আইনের সব অধ্যায়ের জন্য শ্রমিক বলতে কি বুঝবে তা উক্ত সংজ্ঞা দ্বারা নির্ধারিত হবে, যেমন ধারা (৪৫) অনুসারে প্রনিত মজুরির সংজ্ঞার অনুরূপ। মজুরী স্পেশাল কোন সংজ্ঞা ব্যতিত শ্রম আইনের সব অধ্যায়ের জন্য মজুরী বলতে কি বুঝবে তা উক্ত সংজ্ঞা দ্বারা নির্ধারিত হয়।
আবার ধারা-১৭৫ শ্রমিকের একটা স্পেশাল সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র ত্রয়োদশ অধ্যায়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য অর্থাৎ ট্রেড ইউনিয়ন এবং শিল্প সম্পর্ক অধ্যায়ে শ্রমিক বলতে কি বুঝাবে তা অত্র সংজ্ঞা দ্বারা নির্ধারিত হবে। অত্র সংজ্ঞা অনুসারে শ্রমিক বলতে যা বুঝাবে তা অন্য কোন অধ্যায়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। শ্রমিকের এটি যেমন একটি স্পেশাল সংজ্ঞা তেমনি ধারা ১২০ অনুসারে মজুরীর সংজ্ঞাটিও একটি স্পেশাল সংজ্ঞা, উক্ত সংজ্ঞা অনুসারে মজুরি বলতে যা বুঝায় তা শুধুমাত্র দশম অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত। উক্ত সংজ্ঞা দ্বারা নির্ধারিত মজুরি দশম অধ্যায়ের প্রয়োজনে মজুরি হিসেবে পরিগনিত হবে, অন্য কোন অধ্যায়ের ক্ষেত্রে এই সংজ্ঞা দ্বারা নির্ধারিত মজুরী, মজুরী হিসেবে পরিগনিত হবে না।]

ধারা- ৪৮ প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার পরিমাণঃ-
() এই আইনের অধীন যে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা প্রদেয় হইবে উহা উপ-ধারা () উল্লিখিত পন্থায় গণনা করিয়া দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক, যে ক্ষেত্রে যাহা প্রযোজ্য, গড় মজুরী হারে সম্পূর্ণ নগদে প্রদান করিতে হইবে৷
() উপ-ধারা () এর প্রয়োজনে দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক গড় মজুরী গণনার জন্য সংশ্লিষ্ট মহিলা কর্তৃক এই অধ্যায়ের অধীন নোটিশ প্রদানের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন মাসে তাহার প্রাপ্ত মোট মজুরীকে উক্ত সময়ে তাহার মোট প্রকৃত কাজের দিনগুলি দ্বারা ভাগ করিতে হইবে৷

ব্যাখ্যাঃ প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা হিসাবের প্রয়োজনে দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক গড় মজুরী গণনার জন্য সংশ্লিষ্ট মহিলা কর্তৃক এই অধ্যায়ের অধীন নোটিশ প্রদানের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন মাসে তাহার প্রাপ্ত মোট মজুরীকে উক্ত সময়ে তাহার মোট প্রকৃত কাজের দিনগুলি দ্বারা ভাগ করিতে হইবে৷ এখানে উক্ত হিসাবটি নির্নয়ের জন্য তিনটি বিষয় আমাদেরকে বুঝতে হবে।
এই তিনটি বিষয় হল, যথাঃ-
 ) পূর্ববর্তী তিন মাসে বলতে কি বুঝনো হয়েছে।
) সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের তিন মাসে তাহার প্রাপ্ত মোট মজুরী বলতে কি বুঝনো হয়েছে।
) সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট প্রকৃত কাজের দিনগুলি বলতে কি বুঝনো হয়েছে।

নিন্মে এগুলো পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলঃ-

) পূর্ববর্তী তিন মাসে বলতে কি বুঝানো হয়েছেঃ
যেহেতু শ্রম আইন এবং বিধিতে মাসের কোন সংজ্ঞা প্রদান করেনি সেহেতু জেনারেল ক্লজেস অ্যাক্ট, ১৮৯৭ অনুসারে সংজ্ঞায়িত মাসের সংজ্ঞা এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। জেনারেল ক্লজেস অ্যাক্ট, ১৮৯৭ এর ধারা (৩৩) অনুসারেমাসঅর্থে ব্রিটিশ পঞ্জিকা অনুযায়ী গণনাকৃত মাসকে বুঝাইবে। তাহলে এক্ষেত্রে পুর্ববর্তী তিন মাস বলতে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক যে মাসে নোটিশ প্রদান করবেন তার অব্যবহিত পুর্ববর্তী ব্রিটিশ পঞ্জিকার তিন মাসকে বুঝাবে। অর্থাৎ কোন শ্রমিক যদি জুন মাসের কোন একদিন নোটিশ প্রদান করে তবে তার ক্ষেত্রে অব্যবহিত পুর্ববর্তী তিন মাস বলতে মে, এপ্রিল এবং মার্চকে বুঝাবে।

) সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের তিন মাসে তাহার প্রাপ্ত মোট মজুরী বলতে কি বুঝনো হয়েছেঃ
প্রাপ্ত মোট মজুরী বলতে উক্ত শ্রমিকের চতুর্থ অধ্যায়ের অধীন প্রাপ্য প্রসূতি কল্যান সুবিধা প্রদানের জন্য মোট মজুরী নির্নয় করিতে হইবে। চতুর্থ অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত মজুরীর সংজ্ঞাভুক্ত [ধারা- (৪৫)] উক্ত শ্রমিক কর্তৃক নোটিশের অব্যবহিত পুর্ববর্তী তিন ব্রিটিশ পঞ্জিকা মাসে যে মজুরী অর্জন করেছেন তার যোগ করে মোট মজুরী নির্নয় করিতে হইবে। অন্য কোন অধ্যায়ের জন্য প্রযোজ্য [ধারা- ১৪() এবং ধারা ১২০ এর সংজ্ঞাভুক্ত মজুরী] কিন্ত চতুর্থ অধ্যায়ের জন্য প্রযোজ্য নয় এরূপ সংজ্ঞাভুক্ত কোন মজুরী সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্তৃক উক্ত তিন মাসে অর্জিত হলেও চতুর্থ অধ্যায়ের উদ্দেশ্য তা মজুরী হিসাবে পরিগণিত হবে না।

) সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট প্রকৃত কাজের দিনগুলি বলতে কি বুঝনো হয়েছেঃ
সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্তৃক নোটিশের অব্যবহিত পুর্ববর্তী তিন ব্রিটিশ পঞ্জিকা মাসে স্বশরীরে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কাজ করার দিন গুলোর যোগফলকে বুঝাবে।
উদাহরণঃ-

মনেকরি ন্যূনতম মজুরি বোর্ড কর্তৃক ঘোষিত নং গ্রেডে কর্মরত মিস ফ্লোরা একজন সিনিয়র অপারেটর, তার মাসিক মজুরী নিন্মরুপঃ
মাসিক মুল মজুরি৫৩৩০, বাড়ি ভাড়া ভাতা- ২৬৬৫, চিকিৎসা ভাতা- ৬০০, যাতায়াত ভাতা- ৩৫০, খাদ্য ভাতা- ৯০০, মোট মজুরি- ৯৮৪৫ টাকা
মিস ফ্লোরা জুন মাসের তারিখে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নোটিশ প্রদান করে যে তার আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা রয়েছে এবং তিনি ১০ তারিখ হতে মার্তৃত্বকালীন ছুটিতে যাবেন, এখন তার মার্তৃত্বকালীন সুবিধার পরিমাণ নির্ণয় করতে হবে।
মনে করি মিস ফ্লোরা মার্চ মাসের তারিখ হতে ১০ তারিখ পর্যন্ত দিন স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন এবং দিনের সাপ্তাহিক ছুটি সহ ১০ দিনের জন্য পরিশোধ পান ৩১৭৬/- টাকা, উক্ত দিনগুলোতে ১০ ঘন্টা ওভার টাইমের জন্য পরিশোধ পান ৫১৩/- টাকা
১১ তারিখ হতে ১৫ তারিখ পর্যন্ত দিন সাময়িক বরখাস্ত কালীন সময়ে খোরাকী ভাতাসহ অন্যান্য ভাতা পান ৭২৮/- টাকা, ১৬ তারিখ হতে ৩১ তারিখ পর্যন্ত ১৬ দিনের ( দিন সাপ্তাহিক ছুটি) লে-অফ ক্ষতিপূরণ ২৪০৭/- টাকা, এছাড়া তিনি ১০ দিনের অর্জিত ছুটির জন্য ৩২৮২/ টাকা সহ মার্চ মাসে মোট পরিশোধ পান ১০১০৬/- টাকা। উক্ত মাসে তাহার প্রকৃত কাজের দিন - দিন
এপ্রিল মাসে কারখানা মহামারী জনিত কারণে বন্ধ থাকায় তিনি কারখানায় কোন হাজিরা দেননি তবে ত্রিপাক্ষিক সমঝোতার ভিত্তিতে মোট মজুরীর ৬৫% অর্থাৎ ৬৩৯৯/- টাকা পরিশোধ পান।উক্ত মাসে তাহার প্রকৃত কাজের দিন - ০০ দিন।
মে মাসে তিনি কারখানায় স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন ২১ দিন, দিন সাপ্তাহিক ছুটি এবং দিন উৎসব ছুটি ছিল। কারখানায় কাজ করেন মোট মজুরী পান ৯৮৪৫/- টাকা, অতিরিক্ত সময় কাজের জন্য ১০০৫/- টাকা, উৎসব বোনাস ৪৯২৫/- টাকা, হাজিরা বোনাস ৫০০/- টাকা, পুষ্টি ভাতা ৭৭৫/- টাকা প্রাপ্য হন। তিনি উক্ত মাসে মোট ১৭০৫০/- টাকা প্রাপ্য হন।
উক্ত মাসে তাহার প্রকৃত কাজের দিন - ২১ দিন

মিস ফ্লোরার মার্তৃকালীন সুবিধার হিসাব কি হবে ?
হিসাব নির্নয়ঃ

প্রথম ধাপ- নোটিশ প্রদানের অব্যবহিত পুর্ববর্তী তিন মাস নির্নয়ঃপ্রথমে আমাদের নির্ধারন করতে হবে মিস ফ্লোরার ক্ষেত্রে নোটিশের অব্যবহিত পুর্ববর্তী ব্রিটিশ পঞ্জিকার তিন মাস। মিস ফ্লোরা যেহেতু জুন মাসের তারিখে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নোটিশ প্রদান করেছেন সেহেতু তার ক্ষেত্রে নোটিশ প্রদানের অব্যবহিত পুর্ববর্তী তিন মাস হবে মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাস।

দ্বিতীয় ধাপ- মিস ফ্লোরার উক্ত তিন মাসে চতুর্থ অধ্যায়ের অধীন অর্জিত মোট মজুরী নির্নয়ঃ
এখানে আমরা মিস ফ্লোরার উক্ত তিন মাসে অর্জিত মজুরীর মধ্যে চতুর্থ অধ্যায়ের জন্য প্রযোজ্য মজুরী নির্ধারন করব।

মার্চ মাস
নির্ধারিত সময় এবং অধিকাল কাজের জন্য মজুরী পান ৩৬৮৯/-
(ধারা (৪৫) অনুসারে চতুর্থ সহ সব অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত মজুরীর সংজ্ঞা অনুসারে প্রাপ্য মোট মজুরী)
বরখাস্ত কালীন সময়ে খোরাকী ভাতাসহ অন্যান্য ভাতা পান ৭২৮/- টাকা,
(শুধুমাত্র দশম অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত ধারা-১২০ এর অধীন মজুরীর সংজ্ঞা অনুসারে মজুরী হিসাবে পরিগণিত যা অন্য কোন অধ্যায়ের অধীন মজুরীর হিসাব গণনার ক্ষেত্রে মজুরী হিসাবে পরিগণিত হবে না।)
লে-অফ ক্ষতিপূরণ ২৪০৭/- টাকা
(শুধুমাত্র দশম অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত ধারা-১২০ এর অধীন মজুরীর সংজ্ঞা অনুসারে মজুরী হিসাবে পরিগণিত যা অন্য কোন অধ্যায়ের অধীন মজুরীর হিসাব গণনার ক্ষেত্রে মজুরী হিসাবে পরিগণিত হবে না।)
১০ দিনের অর্জিত ছুটির জন্য ৩২৮২/- টাকা
(শুধুমাত্র দশম অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত ধারা-১২০ এর অধীন মজুরীর সংজ্ঞা অনুসারে মজুরী হিসাবে পরিগণিত যা অন্য কোন অধ্যায়ের অধীন মজুরীর হিসাব গণনার ক্ষেত্রে মজুরী হিসাবে পরিগণিত হবে না।)

এপ্রিল মাস
ত্রিপাক্ষিক সমঝোতার ভিত্তিতে প্রাপ্য মজুরী ৬৩৯৯/- টাকা।
(শুধুমাত্র দশম অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত ধারা-১২০ এর অধীন মজুরীর সংজ্ঞা অনুসারে মজুরী হিসাবে পরিগণিত যা অন্য কোন অধ্যায়ের অধীন মজুরীর হিসাব গণনার ক্ষেত্রে মজুরী হিসাবে পরিগণিত হবে না।)

মে মাস
নির্ধারিত সময় এবং অধিকাল কাজের জন্য মজুরী পান ১০৮৫০/-
(ধারা (৪৫) অনুসারে চতুর্থ সহ সব অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত মজুরীর সংজ্ঞা অনুসারে প্রাপ্য মোট মজুরী)
উৎসব বোনাস ৪৯২৫/- টাকা,
(শুধুমাত্র দশম অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত ধারা-১২০ এর অধীন মজুরীর সংজ্ঞা অনুসারে মজুরী হিসাবে পরিগণিত যা অন্য কোন অধ্যায়ের অধীন মজুরীর হিসাব গণনার ক্ষেত্রে মজুরী হিসাবে পরিগণিত হবে না।)
হাজিরা বোনাস ৫০০/- টাকা, পুষ্টি ভাতা ৭৭৫/- টাকা প্রাপ্য হন।
(শুধুমাত্র দশম অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত ধারা-১২০ এর অধীন মজুরীর সংজ্ঞা অনুসারে মজুরী হিসাবে পরিগণিত যা অন্য কোন অধ্যায়ের অধীন মজুরীর হিসাব গণনার ক্ষেত্রে মজুরী হিসাবে পরিগণিত হবে না।)
অতএব মিস ফ্লোরার প্রসূতি কল্যান সুবিধা হিসাবের তিন মাসে মোট মজুরী হবেঃ
মার্চ মাস- ৩৬৮৯ টাকা + এপ্রিল মাস- ০০০০ টাকা + মে মাস- ১০৮৫০ টাকা= মোট ১৪৫৩৯ টাকা
তৃতীয় ধাপ- মিস ফ্লোরার উক্ত তিন মাসে মোট স্ব-শরীরে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির দিনঃ
মার্চ মাস- ০৯ দিন + এপ্রিল মাস- ০০ দিন + মে মাস- ২১ দিন = মোট ৩০ দিন

চতুর্থ ধাপ- মিস ফ্লোরার প্রসূতি কল্যান সুবিধা নির্নয়ঃ
মিস ফ্লোরার দিনের প্রসূতি কল্যান সুবিধা= অত্র অধ্য়ায়ের জন্য প্রযোজ্য গত তিন মাসে ফ্লোরার প্রাপ্য মোট মজুরী ÷ তিন মাসে মোট স্ব-শরীরে উপস্থিতির দিন
= ১৪৫৩৯÷ ৩০
= ৪৮৪.৬৩ টাকা
অতএব মিস ফ্লোরার ১১২ দিনের মোট প্রসূতি কল্যান সুবিধা=১১২ * ৪৮৪.৬৩
= ৫৪২৭৯ টাকা

সার সংক্ষেপঃ সধারণত প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার পরিশোধ দিনের পরিমান হবে একজন শ্রমিকের দিনের মোট মজুরীর সমান বা কিছুটা বেশী। চতুর্থ অধ্যায়ের অধীন প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা হিসাবের ক্ষেত্রে মজুরী বলতে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর (৪৫) ধারায় সংজ্ঞায়িত মজুরীকে বুঝাবে। ক্ষেত্রে একজন মহিলা শ্রমিকের গত তিন মাসের নির্ধারিত সময় চাকুরী বা কাজের জন্য এবং অধিকাল কাজের জন্য পরিশোধিত মজুরীকে বুঝাবে।


প্রধান গবেষকঃ

মোহাম্মদ বাবর চৌধুরী,
এডভোকেট এন্ড এইচ. আর প্রফেশনাল।

গবেষণা সহকারীঃ
মোঃ ইমরুল হাসান,
এইচ. আর প্রফেশনাল।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

Download this advice in PDF


hr documents, hr forms and formats, SOPs, policies and procedures, reports and hr template, Human Resources, HR, HRM, OHSMS, HRBP, ISO, Health and Safety,  job Interview, Jobs, Nebosh, Labour Law, Talent Management, Social Compliance, AI, HRIS, succession Planing, Training in BD, Human resources management in Bangladesh. strategic Human resource management, hr executive, Maternity welfare benefits calculation method  etc format form https://www.resourceacademiabd.com 
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

No comments

Powered by Blogger.